শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫, ২৬ বৈশাখ, ১৪৩২
Live TV
সর্বশেষ

বাঙালির অনুপ্রেরণার উৎস কবিগুরুর জন্মদিন উদযাপন

জনতার ইশতেহার ডেস্ক
৮ মে, ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ণ
বাঙালির অনুপ্রেরণার উৎস কবিগুরুর জন্মদিন উদযাপন
৮ মে, ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ণ

জই২৪ ডটকম

বাঙালির অনুপ্রেরণার উৎস কবিগুরুর জন্মদিন উদযাপন

দেশে নানান আয়োজনে পালিত হচ্ছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। তিনি একাধারে ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, সংগীতকার, সমাজ-সংস্কারক, চিত্রকর, শিক্ষা-উদ্যোক্তা ও রাষ্ট্রচিন্তক। বাঙালির অফুরন্ত সৃজনশীলতা ও মননশীলতার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি রবীন্দ্রনাথ।

কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ সালের ৭ মে) জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা দেবীর চতুর্দশ সন্তান এবং অষ্টম পুত্র রবীন্দ্রনাথই প্রথম এশীয় ও প্রথম বাঙালি; যিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তার এই অর্জন ছিল সাহিত্যে।

রবীন্দ্রনাথের সময়ে বঙ্গ বা বাংলা নামের এই ভূখণ্ডটি রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়নি। পূর্বপুরুষের জমিদারি সূত্রে পূর্ববঙ্গের সঙ্গে আমৃত্যু তার সম্পর্ক ছিল গভীর। বহুবার শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসরে এসেছেন। এসব স্থানে দীর্ঘকাল ধরে বসবাসের অভিজ্ঞতাও হয়েছিল তার। বাংলাদেশের শ্যামল-সবুজ প্রকৃতি হয়ে উঠেছিল তার সাহিত্যচর্চার অফুরন্ত উৎস। সাধারণভাবে যাকে জমিদার বলা হয় অথবা জমিদারি দেখাশোনার কথা ভাবা হয়, রবীন্দ্রনাথ সেই অর্থে জমিদার ছিলেন না। তার সরাসরি সম্পর্ক ছিল এই অঞ্চলের মাটি ও মানুষের সঙ্গে।

সেই সম্পর্কের সূত্রেই আমরা তার কাছ থেকে পেয়েছি ‘আমার সোনার বাংলা…’ এই অবিস্মরণীয় বাণীসমৃদ্ধ সংগীত, যা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল। পরে এই গানটিকেই আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তার এই গানসহ আরও অনেক গান এবং ছোটগল্পের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল সেই সময়ের পূর্ববঙ্গের প্রকৃতি ও জনমানুষ। তিনিই প্রথম এই অঞ্চলে জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যাংক। শাহজাদপুরে সমবায়ভিত্তিক দুগ্ধখামার।

১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ইংরেজিতে অনূদিত গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল পুরস্কার পান। সেই সূত্রে তিনিই প্রথম বাংলাসাহিত্যকে বিশ্বসভায় গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত করেন। ব্রিটিশ উপনিবেশবিরোধী অসাম্প্রদায়িক রবীন্দ্রনাথ লালনকেও বাঙালির বৃহত্তর সৃষ্টিশীল ভুবনে তুলে এনেছিলেন। সর্বমানবিক অনুভূতি, আবেগ, আকাঙ্ক্ষার সহজ অতুলনীয় প্রকাশ ঘটেছে রবীন্দ্রনাথের রচনায়। বাঙালির সংকটে ও সংগ্রামে, আন্দোলনে ও অভিব্যক্তিতে, শান্তি ও শ্রেয়োবোধে তিনিই আমাদের সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন। আজ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তার জন্মদিন পালন করবে বাংলাদেশের মানুষ।

নানা আয়োজনে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে এবারের রাষ্ট্রীয় আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে সাতটি বিভাগে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।
কুষ্টিয়ার শিলাইদহে তিন দিনব্যাপী জাতীয় পর্যায়ের আয়োজনের প্রতিপাদ্য ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে শুরু হবে এ অনুষ্ঠান। আয়োজনে স্মারক বক্তব্য দেবেন অধ্যাপক মনসুর মুসা। উদ্বোধনী আয়োজনে নৃত্য পরিবেশন করবেন শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা। সুমা রানী রায় ও বুলবুল ইসলাম শোনাবেন গান।

আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সমবেত সংগীত পরিবেশন করবেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। নৃত্য পরিবেশন করবে নৃত্যদল ভাবনা। গান শোনাবেন রাদিয়া লগ্না, আশরাফ মাহমুদ, সঞ্চিতা রাখী, সায়মা শারমিন ইমা ও আহমেদ শাকিল হাসমী।

আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে ছায়ানটের রবীন্দ্র-উৎসব শুরু হবে। দুই দিনব্যাপী এই উৎসবে পরিবেশিত হবে একক ও সম্মেলক গান, নৃত্য, পাঠ-আবৃত্তি। অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পী ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পী ও দল অংশ নেবে।

আজ বিকেল ৪টায় বাংলা একাডেমির সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সভাকক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একক বক্তৃতা, রবীন্দ্র পুরস্কার-২০২৫ প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। একক বক্তৃতা করবেন গবেষক ও সাহিত্য সমালোচক অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

এ ছাড়া দেশের নানা স্থানে বিভিন্ন সংগঠন নানা ধরনের আয়োজনের মধ্যদিয়ে রবীন্দ্রনাথের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করবে।

জই২৪ ডটকম/স্মরনীয় বরনীয়