সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২ আষাঢ়, ১৪৩২
Live TV
সর্বশেষ

হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২৪ : সবার জন্য শুভ হোক কেটে যাক সব সংকট

সম্পাদকীয়
১ জানুয়ারি, ২০২৪, ৭:৫৭ অপরাহ্ণ
হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২৪ : সবার জন্য শুভ হোক কেটে যাক সব সংকট
১ জানুয়ারি, ২০২৪, ৭:৫৭ অপরাহ্ণ

জই ফটো

নতুন তো কিছু নয়। শীতের কুয়াশা ছিঁড়ে আজো সূর্য উঠেছে। তবু যেন মনে হয়, নতুন দিন নতুন কিছু নিয়েই হাজির হয়েছে। ভোরের আলোতে যেন বেশি মায়া মাখানো। যেন অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা পূরণের বার্তা জানান দিচ্ছে এই আলো। বলছে, সামনের দিনগুলোতে অনিশ্চয়তা কেটে গিয়ে শুভময়তা ছড়িয়ে যাবে— আশাজাগানিয়া কিরণ যেন সে দ্যুতিই ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রত্যেকের মনে, প্রাণে।

আজ ২০২৪ সালের প্রথম দিন। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মতো আমরাও আমাদের অগণিত পাঠককে জানাই ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’। নতুন বছরটি আনন্দে, শান্তিতে ভরে উঠুক—এই প্রত্যাশা। অসীমের পানে মহাকালের যে যাত্রা, সেখানে সূচিত হলো আরেকটি মাইলফলক। এই যে মহাকালের যাত্রা, সেখানে একেকটি বছর আসে নতুন উদ্দীপনা ও প্রেরণা নিয়ে। আমরা মুছে ফেলি গত হয়ে যাওয়া বছরের গ্লানি, উৎসাহ খুঁজে পাই সুখকর ঘটনাগুলো থেকে; তারপর এগিয়ে যাই অগ্রগতির দিকে।

কেমন কেটেছে আমাদের বিদায়ি বছরটি?
২০২৩ সাল ছিল রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি ঘটনাবহুল বছর। ব্যক্তি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানা চ্যালেঞ্জ ও উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে বছরটি। আমাদের জাতীয় জীবনে ২০২৩ সালে একাধিক বড় অর্জন রয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চালু হয়েছে বিদায়ি বছরের অক্টোবরে। চালু হয়েছে ঢাকার সঙ্গে কক্সবাজারের সরাসরি রেল যোগাযোগ। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচল। এর ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশকটি জেলা প্রথমবারের মতো রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে। রাজধানীতে চালু হওয়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন হয়েছে গত বছর। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েও চালু হয়েছে বিদায়ি বছরে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই গত বছর শুরু হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্মম গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। এর বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব প্রতিবাদমুখর হলেও ইসরাইলি হামলা বন্ধে নেওয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ। ইসরাইলের নির্মমতা বন্ধে নতুন বছরে বিশ্ব একটি স্থায়ী পদক্ষেপ নেবে-এ জোর দাবি আমাদের।

বিদায়ি বছরটি ছিল এককথায় প্রিয়জন হারানোর বছর। অনেক বিশিষ্টজনকে হারিয়েছি আমরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সিরাজুল আলম খান ও নূরে আলম সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) ডা. আব্দুল মালিক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কবি আসাদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ রফিক, শিল্পপতি রউফ চৌধুরী ও ফজলুর রহমান, চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, অভিনেতা ফারুক, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, বিজ্ঞানী সালিমুল হক, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ও ভাস্কর শামীম শিকদার। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার, গায়ক অনুপ ঘোষাল। এছাড়া আমরা হারিয়েছি আরও অনেক বিশিষ্টজনকে। তাদের সবার প্রতি রইল আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা।

বিদায়ি বছরে দেশে অনেক দুর্যোগ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালে চারটি ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া দেশে ৫ মাত্রার উপরে মোট ছয়টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। তবে স্বস্তির বিষয়-এসব দুর্যোগে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। দুর্যোগে প্রাণহানি ও ফসলের ক্ষতি এড়ানো বা সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। তবে গাফিলতি আর অবহেলায় অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

নতুন বছরের শুরুতেই দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হোক। দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনের সব সংকট কেটে যাক। মূল্যস্ফীতির জাঁতাকল থেকে রক্ষা পাক দেশবাসী। মানুষের জীবনে ফিরে আসুক স্বস্তি। নতুন বছরে এ সবই আমাদের বড় প্রত্যাশা। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের কর্মস্পৃহা ও উদ্ভাবনী শক্তির কাছে অচিরেই হার মানবে সব ধরনের প্রতিকূলতা। পৃথিবীতে আবার ফিরে আসবে শান্তি। জনগণ, সরকার, রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নতুন বছরটিকে শান্তি-সমৃদ্ধময় ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলবেন। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

জই২৪/সম্পাদকীয়